ফুলের গন্ধে তাঁর নাম
সকালবেলা মসজিদের আঙিনায় নামাজ শেষে উঠতেই দেখি একটি শিশু গাছের নিচে বসে কাঁদছে। তার হাতে ভাঙা একটি ফুলের টব, মাটি ছড়ানো-ছিটানো।
কি হয়েছে বাবা?" আমি হাঁটু গেড়ে বসে জিজ্ঞেস করি।
শিশুটি তার নীল চোখ তুলে তাকায়, "আম্মু বলেছিলেন, এই গোলাপ গাছটা যত্ন করে রাখতে... এখন এটা মরে যাবে..."
আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। হঠাৎ মনে পড়ে যায়, আমারও আম্মু একদিন বলেছিলেন— "যে ভালোবাসা আল্লাহর সৃষ্টিকে ভালোবাসে, সে যেন সরাসরি তাঁকেই ভালোবাসে।"
"চলো, একসাথে এটাকে আবার লাগাই," আমি বলি।
শিশুটি আশায় চোখ উজ্জ্বল করে তোলে। আমরা মাটি কুড়িয়ে টব সাজাই, গাছটাকে সযত্নে রোপন করি। সে তার ছোট হাত দুটি প্রার্থনার ভঙ্গিতে তুলে বলে, "আল্লাহ, আমাদের গাছটা বাঁচিয়ে দাও।"
এক সপ্তাহ পর...
মসজিদের ইমাম সাহেব হাসিমুখে আমাকে ডাকেন, "আসো, তোমাকে কিছু দেখাব।"
গাছের নিচে সেই শিশুটি দাঁড়িয়ে, তার হাতে লাল গোলাপের সমারোহ। গাছটা এখন প্রাণবন্ত, পাতায় পাতায় সজীবতা। শিশুটি আমার দিকে ফুল বাড়িয়ে দেয়, "আপনার জন্য।"
ইমাম সাহেব কাঁধে হাত রেখে বলেন, "জানো, এই গোলাপের গন্ধে মিশে আছে পবিত্র ভালোবাসার সুবাস— একজন মায়ের, একটি শিশুর, আর সৃষ্টিকর্তার প্রতি তোমার মমত্বের।"
আমি ফুলের ঘ্রাণ নিই, চোখ বন্ধ করতেই মনে হয়, যেন আম্মুর স্পর্শ পাচ্ছি।